‘নদীভাঙন এলাকার মানুষ বইলা আমাগোর সাথে কেউ আত্মীয়তাও করতে চায় না। ছেলেমেয়ের বিয়ে-শাদি দিতে গেলে বলে এগের কোনো বাড়ি-ঘর নাই। এরা নদীভাঙা মানুষ। এগের সাথে কুটুম করে লাভ নাই। এই অপবাদ কত দিন মাথায় নিইয়া চলব?’ ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন জলিল শিকদার। পরিবার নিয়ে তিনি থাকেন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের নাসির সরদার পাড়ায়।
আগে জলিল শিকদারের বাড়ি ছিল দৌলতদিয়ার ইসমাঈল শিবরামপুর এলাকায়। পদ্মা নদীর ভাঙনে জমিজমা, ঘরবাড়ি সব বিলীন হয়েছে। পরে নাসির সরদার পাড়ায় অন্যের জমি শনকরা (ইজারা) নিয়ে বাস করেন। দৌলতদিয়া ইউনিয়নে তাঁর মতো অনেকে পদ্মার ভাঙনে বসতভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে অন্যের জমিতে বাস করছেন।
এ বছরও বর্ষা মৌসুমের দৌলতদিয়া ইউনিয়নে পদ্মার ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়েছে উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পদ্মার তীরবর্তী এলাকা। এই দুটি ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, গত বছর ভাঙন ও ভাঙন–আতঙ্কে অন্তত দেড় হাজার পরিবার অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এ বছরও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে দুই হাজার পরিবারের বসতভিটা।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরি থেকে নদীর পাড় ধরে দেবগ্রামের অন্তারমোড় পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকা ভাঙছে। স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভাঙন বাড়তে থাকে। প্রতিদিন ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে। ভাঙনের কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন পার করছেন। তাঁদের অনেকে বসতভিটা ছেড়ে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বিস্তারিত দেখুন দিন কাটছে ভাঙন–আতঙ্কে
ছবি: প্রথম আলো